Thursday, October 13, 2011

কঙ্গো : খুন আর যুদ্ধ

১৯৬০ সালের ৩০ জুন। কঙ্গো স্বাধীন হলো। প্যাট্রিস লুমুমবা প্রধানমন্ত্রী; প্রেসিডেন্ট যোসেফ কাসাভুবু। সময় : ১৯৬০ সালের জুলাই মাস। স্বাধীন কঙ্গোর সেনাবাহিনীতে বিদ্রোহ তৈরি করা হলো, মোশে শোম্বে কঙ্গোর খনিজ সম্পদ সমৃদ্ধ কাটাঙ্গা অঞ্চলকে ঘোষণা করল স্বাধীন। ষড়যন্ত্রকবলিত কঙ্গোর অসহায় মাটিতে আবার পদার্পণ ঘটল বেলজিয়ামের সৈন্যদের। এবারের যুক্তি নতুন। সে নয়া যুক্তি হচ্ছে : বেলজীয় নাগরিকদের ও বেলজীয় খনি স্বার্থ রক্ষা করতে হবে। সময় : ১৯৬০ সালের সেপ্টেম্বর। প্রেসিডেন্ট কাবাভুবু প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে বরখাস্ত করলেন লুমুমবাকে। সময় : ১৯৬০ সালের ডিসেম্বর মাস। লুমুমবাকে গ্রেফতার করা হলো। সময় : ১৯৬১ সালের ফেব্রুয়ারি মাস। লুমুমবাকে খুন করা হলো। খুন করল সেনাপ্রধান জোসেফ মুবুতুর অনুগত সৈন্যরা।

রাজনীতির, স্পষ্টভাবে বললে বলতে হয়, সম্পদ লুটের রাজনীতির আরেকবার বিজয় ঘটল। বিদায় করে দেওয়া হলো লুটের রাজনীতি প্রতিরোধের আর নবজীবন গড়ার রাজনীতির নায়ককে। কিন্তু কবিতায় যেমন বলা হয়েছে, হাত দিয়ে সূর্যের আলো রোধ করা যায় না, তেমনি সত্য আড়াল করা যায় না। লুমুমবা হত্যার তথ্য কিছু কিছু করে প্রকাশিত হলো। নানা খবরে বলা হলো যুক্তরাষ্ট্র ও বেলজিয়ামের যোগসাজশে লুমুমবাকে হত্যা করা হয়েছে। লুমুমবাকে হত্যার জন্য দায়ী করা হলো যুক্তরাষ্ট্র ও বেলজিয়ামকে। এ সংশ্লিষ্ট ঘটনা প্রবাহের একপর্যায়ে রহস্যজনকভাবে ‘নিহত’ হলেন তৎকালীন জাতিসংঘ মহাসচিব দ্যাগ হ্যামারশোল্ড। এত মিথ্যা প্রচার, ষড়যন্ত্র ও হত্যার মধ্যেও লুমুমবা হয়ে উঠলেন নায়ক, আফ্রো-এশিয়া-লাতিন আমেরিকায় নয়া উপনিবেশবাদ আর সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে সংগ্রামে কোটি কোটি মানুষের হৃদয়ে স্থান পেলেন প্যাট্রিস লুমুমবা।

কঙ্গোর প্রসঙ্গ উঠলেই লুমুমবার নাম চলে আসে। স্বাধীনতা ঘোষণার অনুষ্ঠানে বেলজিয়ামের রাজা ঔপনিবেশিক শাসন, লুণ্ঠন, নির্যাতন, হত্যার জন্য কোনো অনুতাপ প্রকাশ করলেন না, চাইলেন না ক্ষমা। তিনি কঙ্গোকে উপনিবেশ বানানোর ‘বিচক্ষণতা’র প্রশংসা করলেন। বেলজিয়ামের বদান্যতা ও নানা ‘শুভ’ কাজের স্তূতি গাইলেন। জবাবে অনুষ্ঠানে দেওয়া ভাষণে লুমুমবা উপবিশেবাদের বিরুদ্ধে সংগ্রামের কথা উল্লেখ করে বললেন : বলপ্রয়োগ করে আমাদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া অবমাননাকর দাসত্বের অবসান ঘটানোর জন্য সংগ্রাম অবিচ্ছেদ্য, অনিবার্য। আমাদের ক্ষত এখনো শুকিয়ে যায়নি। আমাদের যন্ত্রণা প্রবল। আমরা নিগ্রো তাই সকালে, দুপুরে, রাতে আমাদের মার খেতে হতো, অপমান সইতে হতো। এ নির্মম পরিহাস! আমরা দেখেছি, আমাদের দেশ লুট করে নেওয়া হয়েছে, তা করা হয়েছে আইনের কথা বলে। সে আইন কেবল একটি বিষয়ই স্বীকার করে; তা হচ্ছে শক্তিধরের অধিকার আমরা আইনের নানারূপ দেখেছি। সাদার ক্ষেত্রে এক রকমের আইন, কালো মানুষের ক্ষেত্রে আরেক রকম। আমরা জেনেছি রাজনৈতিক অভিমতের কারণে বন্দিদের নির্মম দুর্ভোগের কথা। তাদের ভাগ্য ছিল মৃত্যুর চেয়েও মন্দ। সেই গুলি চালনার কথা কে ভুলবে, যে ঘটনায় আমাদের এত ভাইয়ের মৃত্যু ঘটেছিল? কে ভুলবে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দেওয়া এত ভাইয়ের কথা, যারা অবিচার, নিপীড়ন, শোষণ-শাসনের কাছে আত্মসমর্পণ করতে চাননি? আর আমাদের দমিয়ে রাখার পন্থাই তো ছিল এগুলো।

লুমুমবার ভাষণে রাজা রুষ্ট হলেন। প্রায় ৪১ বছর পরে, ২০০২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে কঙ্গোর নেতা প্যাট্রিস লুমুমবাকে হত্যার জন্য বেলজিয়াম ক্ষমা চায়। কঙ্গোর দৈনিক টেমপেট ডেস ট্রপিকম শিরোনাম লেখে : আততায়ী দিয়ে লুমুমবাকে খুন – ব্রাসেলস অন্তত নিজ দায়িত্ব স্বীকার করছে। লা পটেনশিয়াল পত্রিকা শিরোনাম লেখে : খুন হওয়া মানুষের পরিবার ও কঙ্গোর জনগণের কাছে বেলজিয়াম অপরাধ স্বীকার করছে। লা রেফারেন্স প্লাস শিরোনাম লেখে : বেলজিয়াম আমকস ফরগিভনেস, বেলজিয়াম ক্ষমা চায়।

কিন্তু ইতিহাস ক্ষমা করে না। মানুষ ভোলে না। কঙ্গোর বয়স্ক মানুষের মন থেকে মোছে না তাদের নেতাকে খুনের ঘটনা; ঔপনিবেশিক শাসন আমলে আজকের রাজধানী কিনশাসায় রাতে থাকার জন্য বেলজীয় প্রভুদের কাছ থেকে পারমিট নেওয়ার বিধান; মজুরদের পিঠে বেলজীয় প্রভুদের চাবুকের দগদগে ঘা।

সম্পদ লুট করে নেওয়ার ষড়যন্ত্র কত গভীর, কত নিষ্ঠুর! আর দ্যাগ হ্যামারশোল্ডের মৃত্যু? সদ্য স্বাধীন কঙ্গোয় গৃহযুদ্ধ যাতে না বাঁধে, সে জন্য সে দেশে ছুটে গিয়েছিলেন সে সময়ের জাতিসংঘ মহাসচিব। আজ থেকে প্রায় ৫০ বছর আগে; ১৯৬১ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর তাকে বহনকারী বিমানটি বিধ্বস্ত হয়। মারা যান সুইডেনের অভিজাত পরিবার থেকে আসা এ মানুষটি। যিনি শান্তির জন্য কাজ করতেন, বড় শক্তিদের চোখ রাঙানির ধার ধারতেন না, ছোট ছোট দেশের স্বার্থ রক্ষার চেষ্টা করতেন। সে বিশাল দুর্ঘটনা আজও রহস্যাবৃত। নানা তথ্য থেকে প্রশ্ন দেখা দেয় : তার বিমানটি কি গুলি করে ভূপাতিত করা হয়েছিল? আজ আবার এ প্রশ্ন উঠেছে।

দ্যাগ হ্যামারশোল্ডকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট কেনেডি ‘আমাদের শতাব্দীর সবচেয়ে মহান রাষ্ট্রনায়ক’ হিসেবে অভিহিত করেছিলেন। তিনিই এ যাবত একমাত্র ব্যক্তি, যাকে মৃত্যুর পরে নোবেল শান্তি পুরস্কার দেওয়া হয়। আজও তিনি সুইডেনে জাতীয় বীরের সম্মানে অভিষিক্ত। জাতিসংঘের প্রথম নারী আন্ডার সেক্রেটারি ডেম মার্গারেট আনসটি বলেছেন, হ্যামারশোল্ডের কাজের ধরনের কারণে তার সঙ্গে বিরোধ বাধে তাদের, যারা জাতিসংঘকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করতে চেয়েছিল।

কঙ্গোতে বড় প্রশ্ন ছিল : দক্ষিণের কাটাঙ্গা প্রদেশ কে নিয়ন্ত্রণ করবে? প্রদেশটি তামা, ইউরেনিয়াম ও টিন সম্পদে সমৃদ্ধ। শোম্বের বিচ্ছিন্নতাবাদকে মদদ দেয় বেলজিয়াম। যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রও মদদ দেয়। কাটাঙ্গায় ছিল এসব দেশের স্বার্থ, সেখানকার খনিতে। আর হ্যামারশোল্ডের সমর্থন ছিল কঙ্গোর নির্বাচিত কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি। সে সরকার প্যাট্রিস লুমুমবার সরকার। তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন সমর্থন জানায়, লুমুমবা সরকারকে। কাটাঙ্গায় নেওয়া হয় অন্য দেশ থেকে ভাড়াটে সৈন্য। প্রভুদের মদদে বিপুল অস্ত্রে সজ্জিত সে ভাড়াটে বাহিনীর সামনে অসহায় হয়ে পড়ে সেখানে অবস্থানরত জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনী। হ্যামারশোল্ড চেষ্টা করছিলেন কঙ্গোর কেন্দ্রীয় সরকার আর শোম্বের মধ্যে আলোচনা করে বিরোধ নিষ্পত্তি করাতে। যে রাতে হ্যামারশোল্ডের বিমান রহস্যজনকভাবে ‘বিধ্বস্ত’ হয়, সে রাতে শোম্বের সঙ্গে তার আলোচনায় বসার কথা ছিল। সে ঘটনার প্রায় ৩০ বছর পরে, ১৯৯২ সালে দু’ব্যক্তি ব্রিটেনের দৈনিক গার্ডিয়ানকে চিঠি লিখে জানান, ভাড়াটে সৈন্যরা বিমানটিকে গুলি করেছিল। এ দু’ব্যক্তি হচ্ছেন বিমানটি বিধ্বস্ত হওয়ার ঠিক আগে ও ঠিক পরে কাটাঙ্গায় কর্মরত জাতিসংঘের দু’জন প্রতিনিধি। দক্ষিণ আফ্রিকার ট্রুথ অ্যান্ড রিকনসিলিয়েশন কমিশনের প্রধান ছিলেন ডেজমন্ড টুটু। এ নোবেল বিজয়ীর নেতৃত্বাধীন এ কমিশন ১৯৯৮ সালে আটটি চিঠি প্রকাশ করে। এসব চিঠি থেকে দেখা যায়, ওই বিমানটি নষ্ট করার কাজে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও তৎকালে শ্বেতাঙ্গ বর্ণবাদী শাসন ব্যবস্থাধীন দক্ষিণ আফ্রিকার গোয়েন্দা সংস্থাগুলো জড়িত ছিল। চার বছর ধরে সুইডেনের সাহায্যকর্মী গোরান বিওর্কডাল গবেষণা করেছেন বিষয়টি নিয়ে। এ বিষয়ে সম্প্রতি বই লিখেছেন ব্রিটিশ শিক্ষাবিদ সুসান উইলিয়ামস। বইটির নাম হু কিলড হ্যামারশোল্ড। তারা দু’জনেই এ উপসংহারে পৌঁছেছেন যে, বিমানটিকে হয়তো গুলি করে ভূপাতিত করা হয়। এসব তথ্য মূল ধারার ব্রিটিশ তথ্য মাধ্যম বিবিসি পরিবেশন করেছে।

কত বিচিত্র, কত রহস্যময়, কত নির্মম, কত ষড়যন্ত্রপূর্ণ সম্পদ লুট করে মুনাফাবাজির জগত। ভাবতে অবাক লাগে, এত ঘটনার পরেও এ পৃথিবীতেই দারিদ্র্য‘বিরোধী’ কত ‘যোদ্ধা’ বিশ্ব প্রভুদের পরম মিত্র! দেশে দেশে এরাই কাজ করে সম্পদলোভীদের স্বার্থ নিরাপদ করতে। আর প্রচার শক্তির কত ক্ষমতা। এ খলনায়করাই হয়ে ওঠেন নায়ক। কঙ্গোতেও একই ধারার নাটকের পুনরাবৃত্তি ঘটল।

সময় তখন ১৯৬৩ সাল। শোম্বে কাটাঙ্গার বিচ্ছিন্নতা অবসানে রাজি হয়ে যায়। কারণ লুটের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়ে নেই লুমুমবা। এর পরের বছর শোম্বেকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করেন তখনকার প্রেসিডেন্ট কাসাভুবু, যিনি শোম্বেকে প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছিলেন। আর তার পরের বছরে কাসাভুবু ও শোম্বেকে মসনদ থেকে তাড়িয়ে দিলেন জোসেফ মুবুতু, এক অভ্যুত্থান ঘটিয়ে বহুবার চলা ইতিহাসের প্রতিশোধ যেন!

শুরু হলো মুবুতুর যুগ। তিনি দেশের নাম পাল্টে দিলেন; কঙ্গো হয়ে গেল জায়ের। তিনি নিজের নামও পাল্টালেন, জোসেফ মুবুতু হয়ে গেলেন মুবুতু সেসে সেকো। পাল্টে দেওয়া হলো কাটাঙ্গার নাম, বোধ হয় পাপের স্মৃতি মুছে ফেলার চেষ্টা। তার নাম হলো শাবা। পাল্টে দেওয়া হলো কঙ্গো নদীর নাম। তা হলো জায়ের নদী। কেবল পাল্টাল না সম্পদ লুট আর সে লুটের রাজনীতি। একটি মুবুতুর ৩০ বছরের স্বৈরশাসন জন্ম দেয় একটি শব্দের। তা হলো চৌর্যতন্ত্র। তিনি একদিকে নিজে করলেন লুট। তার প্রিয় সঙ্গীরা করল লুট, তার প্রভুরা করল লুট, আরেক দিকে দেশটিকে বানিয়ে ফেললেন তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন সমর্থিত এঙ্গোলার বিরুদ্ধে পাশ্চাত্যের শক্তিগুলোর হামলা ও অন্তর্ঘাত চালানোর স্প্রিংবোর্ড, লাফ দেওয়ার তক্তা। অর্থাৎ মুবুতুর শাসন ছায়ার নিচে আরামে থেকে লাফ দিয়ে লাফ দিয়ে হামলা করা হতে থাকল এঙ্গোলায়। সেটাও এঙ্গোলাকে লুট করার জন্য নিজ দেশকে এভাবে পরাশক্তির লুটের খেলার ঘুঁটি বানিয়ে মবুতু নিশ্চিত করলেন স্বীয় ‘সু’কর্মের লুটের ও শাসনের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন। মবুতুর দেশের নাম জায়ের আর দুর্নীতি এক হয়ে উঠল, দুর্নীতির আরেক নাম হলো দুর্নীতি জায়ের, জায়েরের আরেক নাম হলো দুর্নীতি। অনুমান করা হয় যে, কেবল মবুতু চারশ’ কোটি ডলারের সম্পদ লুট করেছেন।

অন্যরা? লুটের প্রভুরা? সে হিসাব কোনো দিন পাওয়া যাবে কিনা, কে জানে? তবু লুট প্রেম থামে না, থামে না প্রভুব প্রেম। এমন প্রভু প্রেমিক বা প্রভুর সেস্নহাস্পদ নানা দেশেই ছড়িয়ে আছে।

লুটের একটি নিয়ম হচ্ছে লুটের সম্পদ মুঠোয় জমা হতে থাকে আর মুঠো শিথিল হয়ে ক্ষমতা পিছলে পড়তে থাকে। মবুতুরও হলো তাই। স্নায়ু যুদ্ধ শেষে তাকে আর দরকার হলো না প্রভুদের। তিনি ক্ষমতাচ্যুত হলেন।

এর আগে বেলজিয়ামের কাছে ঋণখেলাপি হয়ে পড়ে মবুতুর শাসনাধীন দেশটি। বিচিত্র! এত সম্পদ, অথচ দেশটিকে কর্জ করতে হয় এবং দেশটি কর্জ শোধ করতে পারে না! প্রতিবেশী দেশ রুয়ান্ডায় ১৯৯৪ সালে গণহত্যা চলে। সে গণহত্যার রেশ ধরে কঙ্গোয় নেমে আসে হানাহানি। আফ্রিকার ইতিহাসের সবচেয়ে রক্তাক্ত যুদ্ধগুলোর একটি আয়োজিত হয় কঙ্গোতে। ঘটনার স্রোত বয়ে চলে, ১৯৯৩ সালে কঙ্গোতে মবুতু সমর্থক ও মবুতুবিরোধী দুটি সরকার গঠিত হয়। রুয়ান্ডার মদদে বিভিন্ন বিদ্রোহী গ্রুপ ১৯৯৭ সালে রাজধানী কিনশাসা দখল করে, তারা ক্ষমতায় বসায় লরেন্ট ডিজায়ার কাবিলাকে। পুনরায় দেশটির নাম হয় গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্র।

স্টিভেন হিয়াট সম্পাদিত এ গেম এজ ওল্ড এজ এম্পায়ার : দ্য সিক্রেট ওয়ার্ল্ড অব ইকোনোমিক হিট মেন এন্ড দ্য ওয়েব অব গ্লোবাল করাপশন বইতে উল্লেখিত হয়েছে যে, লরেন্ট কাবিলাকে সমর্থন দেয় বুরুন্ডি ও উগান্ডাও। এ দুটি দেশ সৈন্য পাঠিয়েছিল ১৯৯৭ সালে কাবিলার বিদ্রোহী গ্রুপকে মদদ যোগাতে। যুক্তরাষ্ট্রের দৃঢ় মিত্র লরেন্ট কাবিলা ক্ষমতায় বসলেন। এর পরে দেশটিতে নানা ঘটনা আর ষড়যন্ত্রের মধ্য দিয়ে যুদ্ধে জড়াল উল্লেখিত দেশগুলো ছাড়াও জিম্বাবুয়ে, নামিবিয়া, এঙ্গোলা। সঙ্গে রইল প্রভুদের ভাড়া করা নানা সশস্ত্র দল। রুয়ান্ডা ও উগান্ডা কাবিলার বিরুদ্ধে বিদ্রোহীদের মদদ দেয়। জিম্বাবুয়ে, নামিবিয়া ও এঙ্গোলা থাকে কাবিলার পক্ষে। সময় তখন ১৯৯৮ সাল। কঙ্গোর মাটিতে শুরু হলো আফ্রিকার ‘প্রথম বিশ্ব’যুদ্ধ। যুদ্ধরত সব পক্ষই পরস্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করল কঙ্গোর সম্পদ লুটের উদ্দেশ্যে যুদ্ধকে আবরণ হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। পুরনো সত্যই যেন আবার উচ্চারিত হলো : লুট আর ভূ-রাজনীতি অনেক সময়ই মিলেমিশে থাকে।

No comments:

Post a Comment