Thursday, August 11, 2011

যে কারণে নাইজেরিয়ায় যুব সংঘাত (তেল-গ্যাস লুণ্ঠন দেশে দেশে-৭)

তেলকে কেন্দ্র করে সংঘাতে কোনো কোনো তেল কোম্পানির বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে যে, সেসব কোম্পানি স্থানীয় জনসাধারণের সঙ্গে সমঝোতার শর্তগুলো সবসময় মেনে চলে না। এমন বক্তব্য উল্লিখিত হয়েছে জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির নাইজার অঞ্চল সংক্রান্ত মানব উন্নয়ন প্রতিবেদনে।
আরো অভিযোগ রয়েছে যে, তেল সংশ্লিষ্ট এলাকার মানুষের প্রতিবাদের নামমাত্র চিহ্ন দেখামাত্র তাদের হত্যা ও জখম করার উদ্দেশ্যে তেল কোম্পানিগুলো সশস্ত্র পুলিশদের ডেকে আনে।  কোনো ব্যক্তি বা সার্বিকভাবে এলাকার জনসাধারণের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট তেল কোম্পানির মতভেদ দেখা দিলে লঙ্ঘিত হয় ব্যক্তির বা এলাকার জনসাধারণেরই অধিকার।
বিরাজমান এসব বাস্তবতা ফুটে ওঠে ২০০৪ সালের মধ্য এপ্রিলে পোর্ট হাইকোর্টে যুবকদের এক সম্মেলনে দেওয়া নাইজেরিয়ার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ওলাসেগুন ওবাসানজোর এক বক্তৃতায়। এ বক্তৃতায় ওবাসানজো নাইজার অঞ্চলে বিপুল তেলসম্পদের সঙ্গে অঞ্চলটির উন্নয়ন ও স্বয়ম্ভরতার তুলনা করেন। তিনি বলেন, সত্যিকার অর্থে আমি স্বীকার করছি যে, সংশ্লিষ্ট সবার আন্তরিকতাহীনতা, দূরদৃষ্টির অভাব ও প্রতিশ্রুতির অভাবে কাঙ্ক্ষিত রূপান্তর চোখে পড়ে না। বরং যা পাওয়া গেছে, সেটা হচ্ছে ব্যর্থ নীতিমালার ফসল। আর তা প্রকাশিত হয়েছে সড়ক ও বিদ্যুৎসহ মৌলিক অবকাঠামো ও স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার অনুপস্থিতি, বিপুলসংখ্যক বেকার, পরিবেশ অবক্ষয় ইত্যাদির মধ্য দিয়ে। এর ফলে দিনে দিনে জমে ওঠা প্রতিক্রিয়া হচ্ছে ক্রোধ, সহজেই সহিংসতার পথ অবলম্বন। তিনি বক্তৃতায় ‘সংশ্লিষ্ট সব’ বলতে সরকার, তেল, গ্যাস কোম্পানি প্রভৃতিকে বোঝান।
সংঘাতে সরকারও জড়িয়ে পড়ে। তেল কোম্পানিগুলোকে পুলিশ বাহিনী রাখার অনুমতি দেওয়া হয়। এর ফলে মৃদু প্রতিবাদের সম্মুখীন হওয়ামাত্র ব্যবহৃত হয় প্রবল শক্তি। নিরাপত্তা বাহিনী শান্তি রক্ষা করবে বলেই মনে করা হয়। কিন্তু দেখা গেছে, নিরাপত্তা বাহিনী নিয়োগ করায় বাহিনী বলপ্রয়োগ করে, আর তা তৈরি করে সংঘর্ষ। এ দ্বিতীয়পর্যায়ে সংঘর্ষ এগিয়ে চলে নিজ পথ ধরে। কখনো কখনো তা হয়ে ওঠে মূল সংঘাতের চেয়েও হিংস্র।
এমনই ঘটনা ঘটেছিল ওলেতে। পুলিশ বাহিনী গুঁড়িয়ে দেয় ওলে শহর। সামরিক বাহিনী নিয়োগ করলে তাও হয়ে ওঠে ধ্বংসকর। ওডির যুবকরা পাঁচজন পুলিশ অপহরণ করে। ফলে সৈন্যরা প্রবেশ করে শহরটিতে। তারপর সৈন্যরা শহরটি ধ্বংস করে। ইজো শহরে যুবকরা কয়েকজনকে জিম্মি করে। ফলে শহরটিতে নির্বিচারে বোমাবর্ষণ করা হয। তবে আতঙ্ক ধরানো এসব ব্যবস্থা যুবকদের নিবৃত্ত করে না; বরং পরিস্থিতির অবনতি ঘটায়। সরকারের ব্যর্থতাও সহিংস সংঘাতে উস্কানি দেয়। এসব ঘটনার মাসুল গুনতে হয় আর্থিক ও সামাজিক দিক থেকে। ঘন ঘন সংঘাত, তার সঙ্গে পুলিশ ও সামরিক বাহিনীর প্রবল অবস্থান গ্রহণ, অস্ত্রের ছড়াছড়ি গোটা অঞ্চলে এমনকি সারাদেশে তৈরি করে নিরাপত্তাহীনতাবোধ। জানমালের প্রতি গুরুতর হুমকি দেখা দেওয়ায় গোটা অঞ্চলে, এমনকি সারা নাইজেরিয়ায় গড়ে ওঠে বিভিন্ন জনগোষ্ঠীভিত্তিক আধা সামরিক বাহিনী। এরা আইন নিজের হাতে তুলে নেয়, অনুসরণ করে জঙ্গলের বিচার। যে যুবকদের উৎপাদনমূলক কাজে নিয়োজিত করা যেত, তারাই হয়ে ওঠে সংকট জর্জরিত এক প্রজন্মের প্রতিনিধি, রোধ আর উদ্ধার ‘শিল্পে’র চর। এ শিল্প তাদের ‘চাওয়ামাত্র পাওয়া’ অর্থের যোগান দেয়। এসব কথা লেখা হয়েছে জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির ওই প্রতিবেদনে।
এতে বলা হয়, এমনকি সংকট মেটাতে পাঠানো সেনাবাহিনী কখনো কখনো হয়ে ওঠে মানবসত্তা অবনতির কারণ যেমন ঘটেছিল ওডিতে। মানবসত্তা অবনতির একটি উপকরণ ধর্ষণ। ওডিতে ব্যাপকসংখ্যক নারী ধর্ষিতা হন সৈন্যদের হাতে। অথচ ওডিতে সেনাদল পাঠানো হয়েছিল শান্তি নিশ্চিত করতে। দু’বছর পরে এলাকাটি ভরে ওঠে পিতৃপরিচয়হীন শিশুতে। মানব মর্যাদার ওপর আঘাতের পাশাপাশি ছড়ায় এইচআইভি রোগ। এ পরিস্থিতি বাড়তি বোঝা চাপায় নারী ও যুবকদের ওপর।
ওই প্রতিবেদনে একথাও উল্লেখ করা হয়, যুবকদের মধ্যে যে সংকট দেখা দেয়, তার একটি প্রকাশ ঘটে ১৯৬৬ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি। ইজোতে শুরু হয় ১২ দিনের বিপ্লব। একদল যুবক নাইজার বদ্বীপ অঞ্চলের ইজো এলাকাকে ‘নাইজার ডেল্টা পিপলস রিপাবলিক’ বা ‘নাইজার বদ্বীপ অঞ্চলের জনপ্রজাতন্ত্র’ ঘোষণা করে। তাদের লক্ষ্য ছিল এলাকাটিকে মুক্ত করে পেট্রোলিয়াম সম্পদের সুবিধাপ্রাপ্তি। এ যুবদল তেলের পাইপলাইনগুলো উড়িয়ে দেয। কিন্তু ১২ দিনের মধ্যে দলনেতা ও তার সহযোগীদের গ্রেফতার করা হয়। তাদের বিচার হয়। বিচারে তাদের মৃত্যুদন্ড হলেও পরে তা মার্জনা করা হয়।
ওগোনি ও অন্যান্য অঞ্চলেও বিদ্রোহ দেখা দেয়। সেটা শুরু হয় নববইয়ের দশক থেকে। স্থানীয় পর্যায়ের সংঘাতগুলোর একটি বৈশিষ্ট্য ছিল। তা হচ্ছে : প্রতিবাদ ছিল প্রধানত তেল কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে। এসবের মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ছিল রিভারস অঙ্গরাজ্যে উনুয়েচেমে বিক্ষোভ। সেখানকার তরুণরা ১৯৯০ সালের ডিসেম্বরে এ বিক্ষোভ করে। তাদের বিক্ষোভ ছিল তেল কোম্পানি শেল অয়েলের বিরুদ্ধে। আর বিক্ষোভের কারণ তাদের এলাকায় তেল আহরণের ফলে পরিবেশের ক্ষতি এবং উন্নয়ন না ঘটা। শেল অয়েলের আমন্ত্রণে বিক্ষোভ দমনে আসে পুলিশ। একজন পুলিশ কর্তা নিখোঁজ হন। সন্দেহ করা হলো যে, যুবকরা বিক্ষোভকালে তাকে হত্যা করেছে। ফলে পুলিশ পাঠালো এলাকায় দমন দল। এর তান্ডবে এলাকায় জানমালের বিপুল ক্ষতি হয়।
এ ধরনের বিক্ষাভ, প্রতিবাদ, দমন, নৃশংসতা, প্রাণ ও সম্পদের ক্ষতির বিবরণ কম নয়। এসব বিক্ষোভ অনেকাংশেই স্বতঃস্ফূর্ত, অপরিকল্পিত, সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য ছাড়া। কিন্তু এসব প্রতিবাদ-প্রতিরোধে বিবর্তন ঘটে, ঘটে বিকাশ। তেমনই ঘটনা দেখা গেল ১৯৯০ সালে।
জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির ওই প্রতিবেদনেই এর সংক্ষিপ্ত বিবরণ রয়েছে। শিক্ষিত, উচ্চবর্গের মানুষ ১৯৯০ সালে গঠন করেন মুভমেন্ট ফর দ্য সারভাইভাল অব ওগোনি পিপল, ওগোনি জনগণের বেঁচে থাকার আন্দোলন। সে বছরের শেষ ভাগে এ আন্দোলন পেশ করে ওগোনি বিল অব রাইটস নামে একটি দলিল। এ দলিলে সুস্পষ্টভাবে পরিবেশগত ও সামাজিক, রাজনৈতিক অধিকারগুলোর ভিত্তিতে দাবিনামা ব্যক্ত করা হয়। অল্প কালের মধ্যে গড়ে ওঠে যুব শাখা। এ যুব শাখা প্রতিবাদ বিক্ষোভ সংগঠিত করা শুরু করে। এসব প্রতিবাদ বিক্ষোভ বহুলাংশে ছিল শান্তিপূর্ণ। তবে ১৯৯৪ সালের ২১ মে পর্যন্তই তা ছিল শান্তিপূর্ণ। সেদিন আরেক দল যুবকের আক্রমণে নিহত হয় এ দলের চার যুবক। এ ঘটনা চূড়ান্ত রূপ নেয় এক ওগোনি যুবকের ফাঁসির মধ্য দিয়ে। সেই থেকে ওগোনিল্যান্ডে শুরু হয় যুব বিদ্রোহের সংকট। এর বহুলাংশে রয়েছে পরিবশ আর জনগণের স্বার্থের কথা বিবেচনা না করে তেল আহরণ করায় তেল কোম্পানিগুলোকে বাধা দেওয়া।
যুব বিদ্রোহের সংকটের বিস্তার নিয়ে ওই প্রতিবেদনে আরো উল্লেখ করা হয়েছে, এ বিষয়টি তেল আহরণের ক্ষেত্রে তেল কোম্পানিগুলোর অনুসৃত পন্থার উপজাত বলেই মনে হয়।
এ প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ইজো যুব পরিষদের কথা। কয়েকজন ইজো যুবকের বৈঠকের পরে বিস্তার ঘটে এ সংকটের। এ যুবকরা ১৯৯৮ সালের ১১ ডিসেম্বর এই বৈঠকে মিলিত হয়। এর মধ্য দিয়ে প্রণীত হয় কাইয়ামা ডিক্লারেশন বা কাইয়ামা ঘোষণা। এ ঘোষণায় সম্পদের মালিকানা ও নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কে সুদূর প্রসারী সব দাবি জানানো হয়। এ যুবকরা দাবি তোলে, উত্থাপিত বিষয়গুলোর নিরসন না হলে ১৯৯৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর সব তেল কোম্পানিকে নাইজার বদ্বীপ অঞ্চল ছেড়ে যেতে হবে। ইজো অধ্যুষিত প্রধান প্রধান শহরে আয়োজন করা হয় র‌্যালি। কিন্তু অবশেষে এ বিদ্রোহ দমন করা হয় নির্মমভাবে।
ওগোনি বিল অব রাইটস, কাইয়ামা ডিক্লারেশন এবং উরহোবো ও ইটসেকিরিসহ বিভিন্ন জনগোষ্ঠী কর্তৃক বিভিন্ন বিল বা রাজনৈতিক দলিল প্রণয়নের পর থেকে গড়ে উঠেছে বিভিন্ন মিলিশিয়া গ্রুপ বা আধা সামরিক দল। এ তথ্য উল্লেখ করে উপরোক্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, এসব আধা সামরিক দল স্ব স্ব জনগোষ্ঠীর স্বার্থ রক্ষা করে বলে দাবি করে। এ আধা সামরিক দলগুলো কেবল নাইজার বদ্বীপে সীমাবদ্ধ নয়। ইয়োরুবাল্যান্ডে রয়েছে উড়ুয়া পিপলস কংগ্রেস, ইবোল্যান্ডে রয়েছে যাকাসি বয়েজ, নাইজেরিয়ার উত্তর অঞ্চলে রয়েছে এরেওয়া পিপলস কংগ্রেস। নাইজার বদ্বীপ অঞ্চলের আধা সামরিক গ্রুপগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি পরিচিত হচ্ছে এগবেসু বয়েজ অব আফ্রিকা, কাইয়ামা ডিক্লারেশনের পরে এ সংগঠনের উত্থান। ইজোদের পরিবেশগত ও সামাজিক-রাজনৈতিক অধিকারগুলো রক্ষার উদ্দেশ্যে গড়ে উঠেছে এ সংগঠন। এসব আধা সামরিক সংগঠনের ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরন রয়েছে বলে জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির ওই প্রতিবেদনে বলা হয়। এতে উল্লেখ করা হয়, এ ধরনের কোনো কোনো সংগঠনের ভিত্তি হচ্ছে জাতিগোষ্ঠী বা জনগোষ্ঠীগত সীমানা। বিভিন্ন অঞ্চলে রয়েছে এদের বিপুলসংখ্যক অনুসারী। আবার কোনো কোনো আধা সামরিক গোষ্ঠীর আয়তন সীমিত। এগুলো ব্যক্তিকেন্দ্রিক। এমনই সংগঠনের গড়পড়তা উদহারণ হচ্ছে নাইজার ডেল্টা ভলান্টিয়ার ফোর্স। এটি গড়ে ওঠে ২০০৫ সালে। এর নেতৃত্ব করেন রিভারস স্টেটের আসারি ডোকুবো। এ সংগঠনটির উদ্দেশ্য হচ্ছে নাইজার বদ্বীপ অঞ্চলের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক মুক্তি এবং সে মুক্তি অঞ্চলটির তেল সম্পদের মালিকানা ও তা নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে অর্জন করা।
প্রশ্ন দেখা দিতে পারে, কেন এ যুব বিদ্রোহ, কেন এ যুব অসন্তোষ? তেল সম্পদ আহরণের সঙ্গে কি এর সম্পর্ক? তেল-গ্যাস আহরণ নিয়ে আলোচনায় এ বিষয়টি উল্লেখের কারণ কি?
মানবসম্পদ উন্নয়ন বিষয়ক ওই প্রতিবেদনে বলা হয় : এর কারণ হিসেবে নানা অভিমত রয়েছে। নাইজার বদ্বীপ অঞ্চলের বাইরে মনে করা হয় যে, এসব হচ্ছে অপ্রয়োজনীয় অশুভ ব্যাপার স্যাপার। এর বিপরীতে নাইজার বদ্বীপ অঞ্চলে মনে করা হয় যে, এসব অনিবার্য ঘটনা ধারা, কখনো কখনো তা অশুভ চরিত্র গ্রহণ করে। প্রেসিডেন্ট ওবাসানজোর অভিমত আগেই উল্লেখ করা হয়েছে। সাবেক গভর্নর আলামিয়েসেইঘার মতামত এ সংঘাতের মিশ্র দিক তুলে ধরে।
তিনি ২০০৫ সালে এক বক্তৃতায় বলেন : ‘সাম্প্রতিক কালে সম্মেলনের পর সম্মেলন, রিপোর্টের পর রিপোর্ট, কমিশনের পর কমিশন চেষ্টা করেছে তারই সমাধান করতে, যা অভিহিত হয়েছে নাইজার বদ্বীপ অঞ্চলের যুব সংকট হিসেবে। অথচ সামাজিক সংঘাত কমছে না। এসব সংঘাতের প্রধান চরিত্র যুবকরা। তারা পরিস্থিতিকে যেদিকে নিয়ে গেছে, তাকে এখন অভিহিত করা হয় যুব অসহিষ্ণুতা হিসেবে। স্পষ্টভাবে বলতে হয়, এ যুব অস্থিরতা নিয়ে আমার কোনো সমস্যা নেই। নাইজার বদ্বীপ অঞ্চলে বিরাজমান আর্থসামাজিক অবস্থায় অসহিষ্ণু হওয়া ছাড়া যুবকদের আর কোনো বিকল্প নেই। একমাত্র সমস্যা হচ্ছে, কখনো কখনো তারা সীমা ছাড়িয়ে গেছে আর অনুসরণ করেছে সেসব পথ, যা নিয়ে গেছে সহিংসতায় ও আইনহীনতায়। তা না হলে, তাদের লক্ষ্য মহান এবং তা তাদের চালিত করে তাদের ভবিষ্যৎকে সম্পূর্ণ ধ্বংস হওয়া থেকে রক্ষা করার দিকে।
এভাবে দেখা যাবে বিষয়টি বা সমস্যাটি নিয়ে নানা অভিমত। সমস্যাটিকে কেবল যুবকদের সমস্যা হিসেবে দেখা হলে তা বাস্তবতার ধারে কাছে যাবে না, কারণ ১. সমস্যাটি এলো কোথা থেকে? তা তো আকাশ থেকে যুবকদের মাথায় ঢোকেনি, ২. সমস্যাটির সঙ্গে যুক্ত আর কোন কোন বিষয়? সমস্যা তো কেবল যুবকদের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, ৩. সমস্যাটি কি কেবল যুবকদের বিষয়গুলোকেন্দ্রিক? যুবকরা যে বিষয়গুলো তুলে ধরেছে, সেগুলো তো বৃহত্তর আর্থসামাজিক, রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের সঙ্গে এবং এ প্রেক্ষাপটে সেগুলো বৃহত্তর ও মৌলিক বিষয়গুলোর সঙ্গে যুক্ত, ৪. যুবকরা কেন অসন্তুষ্ট বা অস্থির বা অধৈর্য হয়ে উঠছে? কেবল যুবকরা নয়, সার্বিকভাবে কোনো মানুষই সহজে বা অল্প কারণে অস্থির-অধৈর্য হয়ে ওঠেন না।
এভাবে প্রশ্ন করে করে এগিয়ে গেলে দেখা যাবে এ সমস্যাটির সঙ্গে যুক্ত যত দিক, বিষয়, পক্ষ তাতে আর এটিকে যুবসমস্যা বা যুবসংকট বলা যায় না। সমাজের অন্যান্য অংশও প্রতিবাদমুখর হয়ে ওঠে সময়, সুযোগ, সাধ্যমতো। আগামীতে সে দিকটি তুলে ধরা যাবে।

No comments:

Post a Comment